উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে শাবি শিক্ষার্থীরা

0 55

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন।

এ সময় স্বেচ্ছায় ২৪ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। এদের মধ্যে ৯ জন ছাত্রী ও ১৫ জন ছাত্র।

অনশনে বসা জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব বলেন, এ ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।

এর আগে শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে আমরণ অনশন করার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার বলেছিলেন, বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। এ সময়ের মধ্যে উপাচার্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে আমরা আমরণ অনশনে যাবো। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে।

এদিকে বুধবার সোয়া ১টার দিকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াছির সরকার ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমরা যারা আমরণ অনশনে বসছি তারা সজ্ঞানে এবং স্বেচ্ছায় এ কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছি। আমাদের এই আন্দোলনের একটিই বক্তব্য, একটিই দাবি; সেটি হলো উপাচার্যের পদত্যাগ। এ উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে যদি কোনো শিক্ষার্থীকে মৃত্যুবরণ করতেই হয় তাহলে আমরা মরতেও রাজি আছি।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের এই মুহূর্তে একটাই দাবি করা হয়েছে। আমাদের দাবির সঙ্গে একমত প্রকাশ করছে কিনা সেটি বলতে চাইলে উনারা আসতে পারে। কিন্তু আমাদের আশ্বস্ত করার নামে সময় নষ্ট করতে আসলে আমরা তাদের কথা শুনতে রাজি নই।

শিক্ষকদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কে কী মন্তব্য করেছে তার দায় আমরা নেব না।

‘শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলা হলো কিন্তু আমাদের শিক্ষকরা আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। এতে আমরা মর্মাহত। কিন্তু আমরা এখনও উনাদের বলতে চাই, আপনারা আমাদের দাবির সঙ্গে একমত হয়ে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান’, যোগ করেন ইয়াছির সরকার।

এদিকে শিক্ষকদের নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের করা নানা মন্তব্যকে ‘অশালীন’ দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকরা।

এর আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নাম উল্লেখ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করেছে পুলিশ।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মো. আবু খালেদ মামুন বলেন, রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসসিটি ভবনের সামনে উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং ক্যাম্পাসে অশান্ত পরিবেশ নিয়ে সোমবার এ মামলা করা হয়। সেখানে দুই থেকে তিনশ জনকে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।

বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্টের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলন শুরু হয়। সেখানে প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার পর থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে।

এ ছাড়া রোববার সন্ধ্যায় জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করার পর সোমবার দুপুর বারোটার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হলে তালা ঝুলিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

মন্তব্য করুন।

আপনার মেইল প্রকাশিত হবে না।