ওমিক্রন মোকাবিলায় জোর প্রস্তুতি স্বাস্থ্য বিভাগের

0 121

 

ওমিক্রন মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনদের কাছে করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (ভেরিয়েন্ট) ওমিক্রনের সম্ভাব্য সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রস্তুতি হিসেবে ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা, রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা জোরদার, জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ গ্রহণ ও প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা এটি নিশ্চিত করেছেন।

দেশে ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ১৫ দফা নির্দেশনা পাঠিয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় আন্তমন্ত্রণালয় সভা হওয়ার কথা রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ সভা ডেকেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, মহামারির সর্বশেষ পরিস্থিতি, টিকাদানের অগ্রগতি ও অমিক্রনের কারণে উদ্ভূত সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে সভায় আলোচনা হবে।

২৬ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনকে ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা উদ্বেগজনক ধরন বলে ঘোষণা করে। গতকাল একে বিশ্বের জন্য অতি উচ্চ ঝুঁকির বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি। এই ধরনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করছে বলে গণমাধ্যমে খবর বের হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনার নতুন এ ধরনের অস্তিত্ব সম্পর্কে কেউ কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। যদিও টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, অমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশসহ ১২টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করে উচ্চ ঝুঁকির দেশের তালিকা তৈরি করেছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। এসব দেশ থেকে ভারতে যাওয়া নাগরিকদের নয়াদিল্লির আইজিআই বিমানবন্দরে করোনার আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হচ্ছে। তালিকায় থাকা অন্য দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বতসোয়ানা, চীন, মরিশাস, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, সিঙ্গাপুর, হংকং ও ইসরায়েল।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক আহমেদুল কবির বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানে না। তবে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান কিছুটা অপরিপক্ব বলেই মনে হয়। কারণ, মহামারি নিয়ে আমরা অনেক ভালো কাজ করেছি। নতুন ধরন নিয়েও আমরা সজাগ ও সতর্ক।’

১৫ দফা নির্দেশনা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক নাজমুল ইসলাম বলেন, দেশের ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনদের কাছে করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

ওই নির্দেশনা গণমাধ্যমকে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নির্দেশনার শুরুতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, লেসেতো এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সময়-সময় ঘোষিত অন্যান্য আক্রান্ত দেশে থেকে আসা যাত্রীদের আন্তর্জাতিক বন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।

আক্রান্ত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন করা এবং শনাক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা নিয়ে আরও দুটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সব ধরনের জনসমাবেশ নিরুৎসাহিত করার জন্য চার ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মসজিদসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তিনটি পৃথক নির্দেশনা আছে।

অফিসে প্রবেশের সময় এবং অফিসে অবস্থানকালে সবার মুখে মাস্ক থাকা দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। মানুষকে সচেতন করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণা চালাতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কথাও ওই নির্দেশনায় আছে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, টিকার জন্য এ পর্যন্ত ৬ কোটি ৮৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৫৩ জন নিবন্ধন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে এবং পূর্ণ দুই ডোজ পেয়েছে ৫৩ শতাংশ।

মন্তব্য করুন।

আপনার মেইল প্রকাশিত হবে না।