বুক ফাটা কষ্ট নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন তামিম ইকবাল

কাওসার আহমেদ.

0 32

প্রসঙ্গ যখন খান সাহেবের অবসর নিয়ে। তাই পেছনের ইতিহাস টানতে হচ্ছে। মাশরাফি এবং তামিম ইকবাল দুজনই একইভাবে পরস্থ হয়েছেন একজনের কাছে। বাকিরাও হয়তো সেভাবেই পরস্থ হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন। সেদিন হয়তো আর বেশীদিন দূরে নয়।

মাশরাফি এবং তামিম কেউই মুখ ফুটে বলেননি। অবসর ঘোষণার সময় একবারের জন্যও কেউ মুখে আনেননি অমক-তমকের নাম। তবে অমুকের কারণে ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন দুই অভিজজ্ঞ ক্রিকেটার। একজন এখনও ঝুলে রয়েছে। তাকে সাময়িক বাদ দিয়ে বলা হয়েছে তার পজিসনে অন্য কাউকে সুযোগ দিয়ে ঝালিয়ে দেখা হচ্ছে। তাকে বাদ দেওয়া হয়নি ভাবনাই রয়েছে। এমন কথার মারপ্যাচে ঝুলে আছে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার।

প্রথমবার বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসার পর একটা পর্যায়ে মাশরাফির ওপর অসন্তুষ্ট হন হাথুরুসিংহে। মাশরাফিকে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের জন্য নানাভাবে তাড়া দেন তিনি। এক পর্যায়ে ত্যক্ত, বিরক্ত হয়ে মাশরাফি ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল টস করার পর ঘোষণা দিয়ে বসেন, ‘আগামী ৬ এপ্রিলের ম্যাচটিই আমার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এরপর আর অধিনায়কত্ব করবো না। খেলবোও না।’

কিন্তু জাতীয় দলে মাশরাফির টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতি ঘটেছে অর্ধযুগ আগে। ঠিক একইভাবে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশ দলের হেড কোচ হয়ে আসার পর হাথুরুসিংহের দ্বিতীয় শিকার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিলেন তামিম ইকবাল।

শুধুমাত্র হাথুরুর সিংহ একা জড়িত নয়। এর পেছনে বিসিবিরও অদৃশ্য হাত রয়েছে। হাথুরুর নীলনকশার সাথে বিসিবির কর্মকর্তাদের অতোপ্রতভাবে জড়িয়ে থাকার নজির থাকতে পারে বলে ধারনা করছেন ভক্তরা।
তারা মনে করছেন হাথুরু বাংলাদেশ ক্রিকেটকে তার দেশের (শ্রীলঙ্কার) মত নরভরে করে দিবেন।

এজন্য তিনি এক এক করে দেশের ক্রিকেটের মাথা ছেটে ফেলছেন। হয়তো বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নতি থামিয়ে দেওয়ার জন্য একধরনের স্বার্থন্বেষী মহল এর সঙ্গে লিপ্ত হয়ে ষড়যন্ত্র করছে। অনেকেই এ বিষয়গুলো বুঝেও চুপ করে আছেন। ভক্ত সমর্থকদের দাবি দেশীয় কোচের আওধীন এনে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সঙ্গে নিয়ে দেশের ক্রিকেটকে বাঁচানো।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের আগে তামিম নিজেকে শতভাগ ফিট মনে না করেও প্রথম ম্যাচ খেলার ঘোষণা দেন। আর তা মোটেও ভালোভাবে নেননি হাথুরু। তিনি ভাবেন, আমি হেড কোচ। আমার মতামত না নিয়ে তামিম নিজেকে শতভাগ ফিট না ভেবেও প্রথম ম্যাচ খেলার কথা বলে কী করে?
এই ক্ষোভ থেকেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাছে ফোন করে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন টাইগার কোচ এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কোচের এমন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও।

দেশের ক্রিকেটের দুই প্রধান অভিভাবক তার ওপর অসন্তুষ্ট এবং সে অসন্তুষ্টির কথা পত্রিকার পাতায়ও চলে এসেছে। এটা তামিমকে খুব দুঃখ দিয়ে থাকবে। তিনি ধরেই নিয়েছেন, বিসিবি প্রধান আর হেড কোচ- দুজনই আমার ওপর অসন্তুষ্ট। আমার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের পথে এটা এক বড় বাধা। এই বাধার প্রাচীর টপকে আমার টিকে থাকা সঠিক হবে না। এমন ভেবেই হয়তো ওয়ানডের সঙ্গে টেস্ট থেকেও সরে যাওয়াকেই শ্রেয় মনে করেছেন তামিম।

তামিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের অবসরের ঘোষণাই এসেছে পাপনের কাছে হাথুরুর ফোনের পরপরই। প্রশিক্ষক হিসেবে তামিমের শতভাগ ফিট না হয়েও খেলার ইচ্ছেটা সমর্থন করেননি হাথুরু। পেশাগত দিক থেকে সেটা দোষের নয়। ঠিকই আছে। কোচ হিসেবে তিনি আনফিট তামিমকে খেলা থেকে বিরত রাখতেই পারেন।

মন্তব্য করুন।

আপনার মেইল প্রকাশিত হবে না।