জনগণের হৃদয়ের মণিকোঠায় চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মাস্টার

মোঃ সোহাগ আরেফিন, উপজেলা প্রতিনিধি, গুরুদাসপুর, নাটোর।

0 465

বলছি একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কথা। জ্ঞানে-গুণে, সততায় , দক্ষতায় একজন আদর্শ রাজনীতিবিদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন আব্দুল মতিন মাস্টার।

কর্ম জীবন শিক্ষকতা দিয়ে শুরু হলেও, এখন তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ৫ নং ধারাবারিষা ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে একনিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

তিনি নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলাধীন ধারাবারিষা ইউনিয়নের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম ও রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান।

পারিবারিক সূত্র থেকে জানা যায়, তিনি ধারাবারিষা ইউনিয়নের সিধুলী গ্রামের চাঁদ মোহাম্মদ মন্ডলের কনিষ্ঠপুত্র। অত্র অঞ্চলে পুরো পরিবারটি একটি রাজনৈতিক পরিবার হিসেবে পরিচিত।

চেয়ারম্যান পরিবারের রাজনৈতিক হাতেখড়ি ঘটে বাবা চাঁদ মোহাম্মদ মন্ডলের মাধ্যমে। চাঁদ মোহাম্মদ মন্ডল ছিলেন একজন সৎ, সাহসী ও ত্যাগী প্রবীণ নেতা। পাকিস্তানী আমলে গ্রাম সরকার ও স্বাধীনতার পর, ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার-ই ধারাবাহিকতায় আব্দুল মতিন মাস্টারের বড় ভাই আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ব্যানারে ইউপি চেয়ারম্যান এবং ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সভাপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানে আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তার এলাকার সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষের অনুপ্রেরণায় ও সহযোগিতার আশ্বাসে রাজনৈতিক জীবনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। শিক্ষকতার পেশায় থাকা অবস্থাতেই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অর্থাৎ সাধারণ মানুষের জীবন-মানের পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে প্রবেশ করেন রাজনৈতিক জীবনে। রাজনৈতিক জীবনের শুরুটাই হয় চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতার মাধ্যমে।

শুধু প্রতিদ্বন্দ্বীতা বললে ভুল বলা হয়। এক ধরনের চ্যালেন্জ তৈরি হয়। কেননা সে সময়ে ধারাবারিষা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী কিছু চ্যালেন্জকে সামনে নিয়ে তার রাজনৈতিক সূচনাটা ছিল অসম্ভব ধরনের।

তার রাজনৈতিক জীবনে বড় সহায়ক হয়ে আবির্ভাব ঘটেন উত্তরবঙ্গের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস এমপির। তিনিও আব্দুল মতিন মাস্টারকে অনুপ্রাণিত করেন রাজনৈতিক জীবনের আত্মপ্রকাশ ঘটাতে। ধারাবারিষার প্রতিটি মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত শিক্ষক থেকে হয়ে উঠেন জনপ্রতিনিধি, নির্বাচিত হন চেয়ারম্যান। সর্বপ্রথম ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সমর্থিত হয়ে নির্বাচনে বিএনপি’র ( হেভিওয়েট) প্রার্থীকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

প্রথমবার নির্বাচিত হয়েই, তিনি সততা, দক্ষতাসহ সবকিছু দিয়ে মানুষের মনকে জয় করে নেন, গড়ে তুলেন নিজেকে একজন আদর্শবান নেতা হিসাবে।
পরবর্তীতে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে আবারও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কর্তৃক মনোনীত হয়ে জাতীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে তার সততা, দক্ষতা, ন্যায়-নিষ্ঠা দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করেন। তার এমন চৌকস, সুদক্ষ ও নিপূণভাবে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করা দেখে মনোমুগ্ধ হয় ইউনিয়নের প্রতিটি মানুষ, জায়গা করে নেন প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।

এরই মধ্যে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মাননায় ভূষিত হন।

সেই সততা দক্ষতা ন্যায়-নিষ্ঠার বহিঃপ্রকাশ ঘটে আবারও ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ এর ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের মাধ্যমে। আব্দুল মতিন মাস্টার তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কর্তৃক মনোনীত প্রার্থী হন। নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে প্রায় তিন হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন।

আব্দুল মতিন মাস্টারের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি দ্য পজিটিভ বাংলাদেশকে বলেন, আমি জানি না জনগণকে কতটুক ভালোবাসতে পেরেছি, তবে হ্যাঁ, যতটুক ভালোবাসতে পেরেছি তার থেকেও জনগণ আমাকে দ্বিগুণ ভালোবেসেছে। তাদের এ ভালবাসার ঋণ, আমি কোনদিনও শোধ করতে পারব না।

ধারাবারিষার প্রতিটি মানুষের কাছে আমি ঋণী। জনগণ যদি আমাদের পরিবারকে ভালো না বাসতো, তাহলে পরপর একই পরিবার থেকে তিনজন চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগই পেতাম না, আর আমিও টানা তৃতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারতাম না।

আমি ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছরে আমার নির্বাচিত এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কাজ করেছি। রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে প্রতিটা উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছি।’

গরিব, দুঃখী, অসহায়, মেহনতী মানুষের পাশে থেকে সর্বদা তাদের সাহায্য সহযোগিতা করেছি। জনগণের পাশে থেকে তাদের সেবক হয়ে ধারাবারিষা ইউনিয়নকে একটি আধুনিক, রোল মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

আব্দুল মতিন মাস্টার প্রথম ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ৬৭৫ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে নির্বাচিত হন ১৪৯৩ ভোটের ব্যবধানে। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ এর ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে চতুর্মূখী চাপে থাকা সত্বেও ২৯৯৭ ভোটের ব্যবধানে তৃতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দিনের পর দিন মানুষের পাশে এসে দাড়ানোর ফলেই ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা বেড়েছে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

তিনি ইউনিয়নবাসীর সাথে থেকে যাবতীয় সমস্যা মোকাবিলায় সহযোগিতা চান। জনগণ যেন কোন ভায়া না হয়ে সরাসরি চেয়ারম্যানের কাছে তাদের দাবী দাওয়া তুলে ধরতে পারেন সে ব্যবস্থাও তিনি নিয়েছেন। সমস্যাগুলো যদি জনগণ তার সামনে উপস্থাপন করতে পারেন তাহলে সকলকে সাথে নিয়ে সকল সমস্যার সমাধান করবেন বলে জানান। সেই সাথে ইউনিয়নবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।

 

আরও সংবাদ পড়ুন

এবার মরণ কামড় দিবেন ইলিয়াস কাঞ্চন

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিয়ো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি : কিশোর আটক

অনলাইন থেকে ইনকাম ও অন্যান্য কোর্স দেখতে ক্লিক করুন

মন্তব্য করুন।

আপনার মেইল প্রকাশিত হবে না।